স্যামসাং S9+ ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা

স্যামসাং গ্যালাক্সি S9+ ব্যবহার করার কয়েকদিন হলো। এ কয়েক দিন ফোনটি ব্যবহার করে নিজের কেমন লেগেছে, কি কি ভালো লেগেছে, কি কি খারাপ লেগেছে তা নিয়েই লিখছি। এটা কোন রিভিউ না। তাই স্পেসিফিকেশন, সব সুবিধা বা অসুবিধা গুলো হয়তো আপনি জানতে পারবেন না। ইউটিউবে এ নিয়ে প্রচুর ভিডিও রয়েছে। যাদের আগ্রহ রয়েছে, আমার ধারণা তাদের এতদিনে সব দেখা শেষ।
কেনার অভিজ্ঞতা আগে শেয়ার করি। সেহেরি খেয়ে ঘুমাতে গিয়ে ফেসবুক ব্রাউজ করছিলাম। তখন একটা এড দেখলাম যে সে কোন সেট এক্সসেঞ্জ করে গ্যালাক্সি S9+ নেওয়া যাবে। আমি সেট ব্যবহার করি মূলত ক্যামেরার জন্য। দেখলাম S9+ এর ক্যামেরা মোটামুটি দারুণ। আমি ব্যবহার করছি iPhone 7+ যার ক্যামেরা গত বছরের জন্য ভালোই ছিল। আইফোন X এর ক্যামেরা ভালো হলেও নচের জন্য সেটটি ভালো লাগেনি। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও iPhone 10 এ আপগ্রেড করা হয়নি। এছাড়া স্টিভ জবস বলে গিয়েছেন Never Settle! অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করে দেখি আবার।
iPhone 7+ এক্সচেঞ্জ ভ্যালু পাবো ৩৫ হাজার টাকা মাত্র। বিকেলে যমুনা ফিউচার পার্কে গিয়ে কথা বলি। ওরা বিস্তারিত জানায়। S9+ এর মূল্য হচ্ছে এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা। কিনতে গেলে ১৫ হাজার টাকা ক্যাশ ব্যাক পাওয়া যাবে নিশ্চিত। তাহলে সেটের দাম হয় ৯০ হাজার টাকা। আমার আইফোনের জন্য ৩৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ সেটের জন্য আমাকে পে করতে হয়েছে ৫৫ হাজার টাকার মত। এছাড়া এক হাজার টাকা দেওয়া হলে সেটের ডিসপ্লে এক বছরের মধ্যে ভেঙ্গে গেলে ফ্রিতে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে। ঐ অফারটা নিলাম।
এখন সব ডেটাই ক্লাউডে। তাই সেট পরিবর্তন করতে তেমন একটা সমস্যা হয়নি।আমার পুরা এনভারনমেন্ট অ্যাপল ফ্রেন্ডলি। ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাব, মোবাইল সবই অ্যাপল প্রোডাক্ট ছিল। সিমিট্রি ভঙ্গ করে আবার অ্যান্ড্রয়েডে ব্যাক করলাম। আইওএস এ অনেক সুবিধে পাওয়া যায় না। অ্যান্ড্রয়েডে অনেক বাড়তি সুবিধে পাওয়া যায়। এর পরও আইফোন ব্যবহার করতে বেশি কম্পোর্টের কারণ হচ্ছে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভালো।
S9+ এর অনেক গুলো সুবিধেই আমার কাছে ভালো লেগেছে তার মধ্যে প্রধানটা হচ্ছে ক্যামেরা। পেছনের ক্যামেরা খুবি দারুণ। বলা যায় আমাদের চোখের সমান ডিটেলস ক্যাপচার করতে পারে। এছাড়া রয়েছে প্রচুর সেন্সর। হার্ট রেট, অক্সিজেন স্যাসুরেশন, স্ট্রেস লেভেল এসব ক্যালকুলেট করা যায়। স্টেপ কাউন্ট তো এখন প্রায় স্মার্ট ফোনেই রইছে। লোক খোলার জন ফিঙ্গার প্রিন্টের পাশাপাশি রয়েছে আইরিশ স্ক্যানার, ফেস স্ক্যানার, ইন্টিলিজেন্ট স্ক্যান ইত্যাদি। যদিও শুধু লক খোলার জন্য এত কিছু দেওয়ার দরকার ছিল না। এছাড়া ইনফিনিটি ডিসপ্লে ব্যবহার করতেও দারুণ লাগছে। কার্ভ ডিসপ্লে পুরাতন হলেও আমার জন্য নতুন, দারুণ লাগে দেখতে। স্যামস্যাং হেলথ অ্যাপটা ও দারুণ লেগেছে। আমি আগেও অ্যান্ড্রয়েড ইউজার ছিলাম। ডিফল্ট সাউন্ড বক্স এর সাউন্ড কোয়ালিটি খুবি দারুণ। এছাড়া রয়েছে Dolby Atoms সাউন্ড। আইওএস থেকে অ্যান্ড্রয়েডে যে সব সুবিধা বেশি পাওয়া যায়, সেগুলো নিয়ে আর না লিখলাম।
অসুবিধের কথা বললে সবার আগেই বলতে হয় চার্জ সমস্যা। 3500অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি হয়েও খুব দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। যেটা আসলে খুবই ফ্রাস্ট্রেটিং। ফ্রন্ট ক্যামেরা খুব একটা ভালো লাগেনি। ভলিউম বাটনটা এমন এক জায়গায় যে এক হাতে ব্যবহার করার সময় ঠিক মত কমানো বাড়ানো যায় না, দুই হাত ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া রয়েছে Bixby এর জন্য আলাদা বাটন। যা আসলে অপ্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে আমার কাছে। এছাড়া ভলিউম কমাতে গিয়ে প্রায় সময় Bixby বাটন প্রেস করি ভুলে। ইনফিনিটি এবং কার্ভ ডিসপ্লে হওয়ার কারণে মাঝে মাঝে ভুল টাচ হয়, সেটা মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগে। দুইটা এসিস্টেন্ট! একটা Bixby আরেকটা গুগল এসিস্টেন্ট। যদিও Bixby ডিসেবল করা যায়।
বাকি সুবিধে অসুবিধে গুলো সহজেই মানিয়ে নেওয়ার মত। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েডের কাস্টমাইজেশন সুবিধে তো রয়েছেই। দুই একটা অসুবিধা ছাড়া সেটটা দারুণ। দেখি কতদিন ব্যবহার করা যায়
নবীনতর পূর্বতন